ব্লগ সাইট বানাতে এখনই

ক্লিক করুন.........



Monday, April 2, 2018

আমি পারব না।। বিবিধ

বাসার নিচে বাচ্চারা খেলছিল। তাদের দুএকজনের মায়েরাও সেখানে দাঁড়িয়েছিল। খেলারত এক বাচ্চা তার মাকে উদ্দেশ্য করে বলল, ‘আম্মু, গ্যারেজ থেকে সাইকেলটা আমি বের করি? চালাতে ইচ্ছে করছে...’

বাচ্চাটির মা খানিক ভেবে বললেন, ‘তুমি পারবে না বাবা! তোমার দারওয়ান আংকেলকে বল, সাইকেলটা বের করে দিতে...’

আর একদিনের কথা! দিনটি সম্ভবত শুক্রবার ছিল। শুক্রবার সারাদিন বাসাতেই থাকা হয়। বাসার নিচে বসে পেপার পড়ছিলাম। এমন সময়, বিল্ডিং এর এক মা তার ৮ বছর বয়সের ছেলেকে নিয়ে নিচে নামলেন। গেটের দায়িত্বে থাকা ভাইকে বললেন, ‘ওকে সাথে নিয়ে একটা আইসক্রিম নিয়ে আসেন তো। বাচ্চাটি বলল- আম্মু, লাগবে না। আমি একাই পারবো। মা চোখ দু’টো পাকিয়ে বললেন- তুমি পারবে না। যাও, আংকেল এর সঙে গিয়ে নিয়ে আসো!’

ছোটবেলা থেকেই এই ‘তুমি পারবে না’ শুনতে শুনতে আমাদের মস্তিষ্ক চূড়ান্তভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে, আমরা আসলেই পারব না। আর একারণেই আজকের ২৫ বছর বয়সের তরুণরাও মনস্তাত্বিকভাবে স্বাবলম্বি হতে পারে না। পারে না, আত্ন:বিশ্বাসী হতে। এমনকি তারা বোধ শক্তির দিক থেকেও হয়, পঙ্গু!

বন্ধুর ভার্সিটির হলে বেড়াতে গিয়েছিলাম। সেখানে বন্ধুর ভার্সিটির বন্ধুর সঙে পরিচয় হয়। আড্ডা জমে উঠতে থাকে। আড্ডার প্রাসঙিকক্রমেই বন্ধুর বন্ধু বলল- জানো, আমি না কোনদিন বাজারেই যাই নি। আম্মু যাইতে-ই দেয় নি।

তার কথা বলার ধরনে ছিল, বিষ্ময়কর দম্ভ কিংবা কৃতিত্ব! আমি অবাক হয়ে বলেছিলাম- বাজারে না যাওয়া কৃতিত্ব নয়, বরং তোমার জীবনের একটা মস্তবড় শূণ্যতা। বাজারে না যাওয়ার কারণে, তুমি জীবনের একটা গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা থেকে বঞ্জিত হয়েছে। সুতরাং বলা যায়, তোমার জীবনটা এক ধরনের অসম্পূর্ণ জীবন।

আর এই অসম্পূর্ণ জীবন নিয়ে আজকের ৯৫% ভাগ শিশুরা বড় হচ্ছে। ‘তুমি পারবে না’ বিশ্বাস করেই তারা বড় হচ্ছে। যার কারণে, বিশ্ববিদ্যালয় শেষ করেও তারা বিশ্বাস করতে পারে না, ‘আমি পারব’। এই বিশ্বাসহীনতার কারণেই তারা চিন্তার দিক থেকে স্বাবলম্বি হতে পারে না। পারে না, আত্নবিশ্বাসী হতে। পারে না, নিজের জীবনের সিদ্ধান্ত নিজেই গ্রহণ করতে।

অথচ ছোটবেলা থেকেই যদি শিশুরা শুনতো, ‘গ্যারেজ থেকে তোমার সাইকেলটা তুমিই বের করবে। নিজের আইসক্রিম খেতে ইচ্ছে করলে, আম্মুকে বলে নিজেই কিনে নিয়ে আসবে। আর স্কুলের ব্যাগটা সবসময় নিজেই বহন করবে। নিজের ভালোলাগাটা তোমাকেই নির্ধারণ করতে হবে।তোমার লক্ষ্য তোমাকেই নির্ধারণ করতে হবে।’

এভাবেই না একটা শিশু মনস্তাত্ত্বিকভাবে আন্ত:বিশ্বাসী হিসেবে বড় হতে থাকবে। আর এই আত্ন:বিশ্বাসী শিশুরাই হবে, আমাদের দেশের ভবিষ্যৎ কর্ণধার। নচেৎ, আজকের ‘তুমি পারবে না’ শোনা শিশুরা বড় হয়ে হবে, ‘আই অ্যাম জিপিএ ফাইভ’!...

এজন্যই নেপুলিয়ন বলেছিলেনঃ আমাকে একজন শিক্ষিত মা দাও, আমি তুমাদের একটি শিক্ষিত জাতি উপহার দিব ।

শাহমুন নাকীব ফারাবী
(Collected )

0 comments:

Post a Comment

ব্লগ সাইট বানাতে এখনই

ক্লিক করুন.........